বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
তিনি বলেছেন, নভেম্বরে ব্রাজিলে আয়োজন করা হবে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-৩০’। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা ও দারিদ্র্য
বিমোচনকে একসঙ্গে সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন বিশ্ব নেতারা।
শিশুমৃত্যু, বাসস্থান, স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ ও শিক্ষার মত সূচকের ওপর ভিত্তি করে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই শিশু।
উদাহরণ হিসেবে, প্রতিবেদনে বলিভিয়ার সবচেয়ে বড় শহর সান্তা ক্রুজ দে লা সিয়েরার বাইরে গুয়ারানি আদিবাসী সম্প্রদায়ের রিকার্ডোর পরিবারের কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়ায়। আর সেখানকার মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। ’
দারিদ্র্য ও পরিবেশগত ঝুঁকির চারটি দিকের সংযোগ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। সেগুলো হল, চরম তাপমাত্রা, খরা, বন্যা এবং বায়ুদূষণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলো জলবায়ু বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ তাদের জীবিকা প্রধানত কৃষি ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমের মতো
ঝুঁকিপূর্ণ খাতের ওপর নির্ভরশীল। যখন একাধিক বিপর্যয় একসঙ্গে বা বারবার আঘাত হানে, তখন তাদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়।
ফলে ৮৮৭ মিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭৯ শতাংশ সরাসরি জলবায়ু ঝুঁকির মুখোমুখি। এর মধ্যে ৬০৮ মিলিয়ন মানুষ তীব্র গরম, ৫৭৭ মিলিয়ন বায়ুদূষণ, ৪৬৫ মিলিয়ন বন্যায় আর ২০৭ মিলিয়ন খরায় ক্ষতিগ্রস্ত।
প্রায় ৬৫১ মিলিয়ন মানুষ অন্তত দু’টি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আর তিন বা চারটি বিপদের মুখোমুখি ৩০৯ মিলিয়ন মানুষ। আর ১ কোটি ১০ লাখ দরিদ্র এক বছরের মধ্যেই সবগুলো বিপর্যয়ই মোকাবেলা করেছে।
দারিদ্র্য ও জলবায়ু ঝুঁকিকে সন্দেহাতীতভাবে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও চরম আবহাওয়ার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বৈশ্বিক উন্নয়নকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয়।
দারিদ্র্যের হার কমানোয় দক্ষিণ এশিয়া অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু এই অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৯৯ দশমিক ১ শতাংশ এখনো কমপক্ষে একটি জলবায়ু ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
দারিদ্র্য মোকাবিলা ও জলবায়ু অভিযোজন একসঙ্গে এগিয়ে নিতে ওই অঞ্চলকে নতুন উদ্যোগ নিতে হবে বলেও সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্বের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোই উষ্ণায়নের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাবের শিকার হবে।
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, একসঙ্গে একাধিক জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় মানুষ ও পৃথিবী উভয়কেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরি হলো পরিস্থিতি বোঝার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপে নেওয়া।
সূত্র : এএফপি।